ভ্রমণের আগে জেনে নিন: সরাসরি নাকি কানেক্টিং ফ্লাইট, কোনটা আপনার জন্য সেরা ?
আকাশ পথে ভ্রমণ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সহজ, আরামদায়ক, আর এতে সময়ও বাঁচানো যায়।
দেশের ভেতরে হোক বা দেশের বাইরে, বিমানে ভ্রমণ এখন প্রায় সবারই কোনো না কোনো সময়ে লাগে। কেউ যায় কাজের জন্য, কেউ বেড়াতে, কেউ আবার প্রিয়জনের কাছে। কিন্তু টিকিট কাটার সময় একটা প্রশ্ন প্রায়ই মাথায় আসে সরাসরি ফ্লাইট নেব, না কানেক্টিং ফ্লাইটে যাবো? কিন্তু আমরা ঠিক বুঝতে পারিনা কোন ফ্লাইট আমার জন্য বেস্ট হবে। আজ আমরা কথা বলবো বিমানে সরাসরি ফ্লাইট এবং কানেক্টিং ফ্লাইট নিয়ে। দুইটার যেমন অভিজ্ঞতা ভিন্ন ঠিক একইভাবে দুইটা ফ্লাইটের খরচও সুযোগ সুবিধা ভিন্ন।
আজ আমরা দেখব, সরাসরি এবং কানেক্টিং ফ্লাইটের পার্থক্য কী, এবং কোনটা আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত।
কানেক্টিং ফ্লাইট কী ?
কানেক্টিং ফ্লাইট মানে, এক শহর থেকে আরেক শহরে বা এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে মাঝপথে ফ্লাইট বদল করতে হয়। সহজ কথায় কানেক্টিং ফ্লাইট মানে হলো যাত্রার মাঝে এক বা একাধিক শহরে থামা।
ধরুন, আপনি ঢাকা থেকে প্যারিস যাচ্ছেন। প্রথম ফ্লাইটে হয়তো আপনাকে নিয়ে যাবে দোহায়, সেখানে কয়েক ঘণ্টার ট্রানজিট, তারপর আবার অন্য ফ্লাইটে পৌঁছে যাবেন প্যারিস।
এই ধরনের যাত্রায় সময় কিছুটা বেশি লাগে, কিন্তু টিকিটের দাম অনেক কমে যায়।
মাঝে মাঝে কিছু দেশে এই প্রক্রিয়ায় নতুন বোর্ডিং পাস নিতে হয়, অন্য গেট বা টার্মিনালে যেতে হয়, আর অনেক সময় আগের ফ্লাইট বিলম্ব হলে কিংবা বোডিং গেটের দূরত্বের কারণে ফ্লাইট মিস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বেশিরভাগ সময় দুই ফ্লাইটের মাঝে অন্তত ৩০–৪০ মিনিটের ব্যবধান রাখা উচিত, কিন্তু বড় এয়ারপোর্টগুলো এই সময়টা আরও বেশি লাগতে পারে।
এছাড়া কানেক্টিং ফ্লাইটে অনেক সময় টার্মিনাল, এমনকি এয়ারলাইনও বদলাতে হয়। তাই যারা প্রথমবার আন্তর্জাতিক ভ্রমণে যাচ্ছেন, তাদের জন্য একটু বাড়তি মনোযোগ দরকার।
এছাড়া, অনেকের কাছে ট্রানজিটটাই মজার অংশ। যাদের বাজেট সীমিত, বা সময় হাতে আছে, তাদের জন্য এটা বেশ কার্যকর বিকল্প। আর ট্রানজিটে আপনি চাইলে এয়ারপোর্টে ঘুরে বেড়াতে পারেন, কফি খেতে পারেন, বা লাউঞ্জে বিশ্রাম নিতে পারেন।
কানেক্টিং ফ্লাইটের সুবিধা
- টিকিটের দাম সাধারণত কম
- রুট ও সময় বেছে নেওয়ার সুযোগ বেশি থাকে
- ট্রানজিটে বিশ্রাম নেওয়া যায়
কানেক্টিং ফ্লাইটের অসুবিধা
- যাত্রায় সময় বেশি লাগে
- ফ্লাইট মিস হওয়ার ঝুঁকি থাকে
- লাগেজ ট্রান্সফার ঝামেলাপূর্ণ হতে পারে
- ক্লান্তি ও মানসিক চাপ বাড়ে
সরাসরি ফ্লাইট কী ?
সোজা কথায়, একবার প্লেনে উঠলেই গন্তব্যে পৌঁছে যাবেন। সাধারণত সরাসরি ফ্লাইটে কোন স্টপেজ কিংবা ট্রানজিট থাকে না। ধরুন আপনি ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুর বা লন্ডন যাবেন, সুতরাং ঢাকা থেকে প্লেনে উঠুন, ঘুমান, সিনেমা দেখুন, আর নেমে পড়ুন আপনার গন্তব্যে এই ফ্লাইটের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো সময় বাঁচানো যায় অনেক। কোন ধরনের অতিরিক্ত ঝামেলা নেই। তবে হ্যাঁ, টিকিটের দাম তুলনামূলকভাবে একটু বেশি হয়।
অনেকে মনে করেন সরাসরি মানেই নন-স্টপ, কিন্তু দুটো এক নয়। কিছু কিছু সরাসরি (Direct) ফ্লাইট মাঝে এক বা একাধিক শহরে থামতে পারে, কিন্তু এতে করে আপনাকে বিমান বদলাতে হবে না কিংবা বিমান থেকে নামতে হবে না।
যেমন ঢাকা থেকে বিমান লন্ডনের উদ্দেশে ছেড়ে গেলেও সিলেট থেকে যাত্রী উঠানোর জন্য থামে তবে আপনাকে কিন্তু বিমান থেকে কিংবা আপনার সিট থেকে নামতে হবে না।
সরাসরি ফ্লাইটে যাত্রা তুলনামূলকভাবে দ্রুত, ঝামেলাহীন, আর বিশেষ করে বাচ্চা, বয়স্ক মানুষ বা অফিসের কিংবা জরুরী কাজে যাওয়া যাত্রীদের জন্য উপযুক্ত। তবে এর দাম কানেক্টিং ফ্লাইটের চেয়ে বেশি হয়।
সরাসরি ফ্লাইটের সুবিধা
- সময় বাঁচে, দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানো যায়
- ঝামেলাহীন যাত্রা, ট্রানজিটের ঝামেলা নেই
- লাগেজ হারানোর ঝুঁকি কম
- ভ্রমণ আরামদায়ক ও মানসিকভাবে স্বস্তিদায়ক হয়ে থাকে
সরাসরি ফ্লাইটের অসুবিধা
- টিকিটের দাম তুলনামূলক বেশি
- ফ্লাইটের সংখ্যা সীমিত
- দীর্ঘ রুটে একটানা ভ্রমণ ক্লান্তিকর হতে পারে
তাহলে কোনটা বেছে নেবেন ?
এটা পুরোপুরি আপনার ভ্রমণ ধরণের ওপর নির্ভর করছে।
কানেক্টিং ফ্লাইট: সময় বেশি লাগে, কিন্তু খরচ কম। যারা ভ্রমণে একটু ধৈর্য ধরতে পারেন বা নতুন এয়ারপোর্টে সময় কাটাতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য উপযুক্ত।
সরাসরি ফ্লাইট: খরচ বেশি, কিন্তু ঝামেলা কম। দ্রুত গন্তবে পৌঁছাতে চান কিংবা শারীরিকভাবে ক্লান্তিকর যাত্রা এড়াতে চান তাদের জন্য একদম পারফেক্ট হচ্ছে সরাসরি ফ্লাইট।
কিছু দরকারি টিপস
- কানেক্টিং ফ্লাইটে নিলে ট্রানজিট টাইম অন্তত ২ ঘণ্টা রাখুন,বিশেষ করে বড় এয়ারপোর্টে।
- লে-ওভার (নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিরতি বা ট্রানজিট) দেশের ভিসা নিয়ম আগে জেনে নিন।
- একই এয়ারলাইনের ফ্লাইট নিলে লাগেজ ট্রান্সফার সহজ হয়।
- ডাইরেক্ট ফ্লাইট বুকিংয়ের সময় অফসিজন অফার খুঁজে দেখুন ।
- কানেক্টিং ফ্লাইটের ক্ষেত্রে লাগেজ “through check-in” করা আছে কিনা নিশ্চিত করুন।
ভ্রমণ হবে স্বস্তিদায়ক
যাত্রা শুরু করার আগে আপনাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আপনার ভ্রমণের জন্য কোন ফ্লাইট বেছে নেবেন: সরাসরি নাকি কানেক্টিং?
আপনার সময়, বাজেট এবং আরামের প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক ফ্লাইট বেছে নেওয়াই স্মার্ট ভ্রমণ পরিকল্পনা আপনার যাত্রাকে করে তুলবে সহজ আর এই যাত্রা আরো নিশ্চিন্তে করতে আপনার পছন্দমত টিকিট বুক করুন Firsttrip থেকে।
Firsttrip.com থেকে টিকেট বুকিং করলে আপনি পাবেন বিশেষ অফার, এক্সট্রা সুবিধা, এবং ২৪/৭ কাস্টমার সাপোর্ট, যা নিশ্চিত করবে আপনার যাত্রা হবে আরও স্বাচ্ছন্দ্যময়, নিরাপদ এবং ঝামেলামুক্ত।